পর্ব -৪
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছি ... ঝরঝর করে জল পড়ছে। ইন্দ্রদার কোনো common sense নেই... অগত্যা আমাকেই বিছানা থেকে উঠে ট্যাপকলটা বন্ধ করে দিতে হল ... ঘড়িতে ভোর সাড়ে চারটে ... ইন্দ্রদা তখন বাথরুমে। কাল রাতে বেশ ভালই বৃষ্টি হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। তাইতো ভোরের আকাশটা আজ এত মোহময় ...একপাশে পড়েছে লাল হলদে তাঁতের শাড়ি আর অন্য দিকে একটা কালো মেঘ সর্বাঙ্গে কালি মেখে ভয় দেখাচ্ছে।
"আরে এই সৌম্য, জানালার ধারে দাঁড়িয়ে তো কবি হয়ে যাবি দেখছি?"
"তাই হোক, তবে তাই হোক-
তোমার চিন্তাধারার জয় হোক।
তবে শপথ করিতেছি
ইন্দ্রকুমার .. তদন্তে তব
করিব না ব্যাঘাত।"
"তবে বিলম্ব কেন বৎস
বস্ত্র পরিধানে?
চলো মোরা বেরিয়ে পড়ি
রহস্য সন্ধানে।" .. আমরা দু'জনেই হেসে উঠলাম।
জায়গাটার নাম সন্ধিগড়। পৌঁছলাম ঠিক নটা বেজে পাঁচ মিনিটে। আমরা অবশ্য প্রথমে থানায় এলাম। ইন্সপেক্টর সায়ন রায়কে আগে যেমন ভেবেছিলাম, ঠিক তার উল্টো মানুষ। আলাপ পরিচয় করার পর নিজে জিপে করে আমাদের একতলা ভাড়া বাড়িতে পৌঁছে দিলেন। ভদ্রলোকের চেহারাটি নাদুস-নুদুস হলেও চোখ দুটি বেশ ক্ষিপ্র ... যে কোনো অপরাধী তাকালেই ভয় খেয়ে যাবে। গোটা মুখে কাঁচা-পাকা দাঁড়ি গোঁফ মেশানো ... যাই হোক, আমাদের পৌঁছে দিয়ে উনি চলে গেলেন আর বিকেলে একবার বাংলোটার কাছাকাছি যাবেন বললেন।
যে বাড়িতে আমরা উঠলাম সেটা অনেকটা ফ্ল্যাট স্টাইলের। পশ্চিমে জানালা দিয়ে চলে গেছে মেঠো পথ ... পূবের জানলায় কয়েক কিমি দূরে সেই ভয়ংকর জঙ্গলটা চোখে পড়ে। দু-একটি পাকা বাড়ি দেখা যায় গ্রামের দরিদ্র খড়ের চালাগুলোর উপর অনেক উঁচুতে দাঁড়িয়ে আছে।
রুমের ভেতরটা সাজানো গোছানো। খাটের পাশে সেলফে আমি আমার গল্প-বইগুলি রেখে দিলাম। এক কোণে একটা ফাঁকা আলনা ... পাশে টেবিল-চেয়ার ... টেবিল ল্যাম্পটা তখনও জ্বলছে ... ঘরের ভেতরে দেয়ালগুলো মনে হয় নতুন চুনকাম করা হয়েছে। হঠাৎ চমকে দিয়ে, কোনোরকম আওয়াজ না করে গুটি-গুটি পায়ে আমাদের ঘরে একজন প্রবেশ করল।
"Sir আসতে পারি? মানে, হে-হে ... আমি মানে বাড়িওয়ালা... মানে, মানে যাকে বলে house..."
"আসুন, আসুন," ইন্দ্রদা চেয়ার ছেড়ে উঠে গেছে।
পাশের একটি চেয়ারে উপবেশন করে উনি বললেন, "আমি মানে, মানে আমার নাম শ্রী ভজহরি চাটুজ্জে। আপনাদের থাকা খাওয়ার arrange ইন্সপেক্টর রায় আমাকেই করতে বলেছেন ... মানে ..."
"হ্যাঁ-হ্যাঁ, আপনার যা ইচ্ছে তাই করবেন। We have no problem ... এত ব্যস্ত হবার কিছু নেই।"
"তাহলে আজকের দিনের food এ কী করব? ... ডাল ... fish এর ঝোল ... বেগুন fry..."
"ব্যস, ওতেই হবে। আচ্ছা এ বাড়িতে আর কেউ থাকে না?"
"No, আমি alone থাকি। তাছাড়া village এর ঘর ... কে ভাড়া নেবে বলুন তো? মানে ... মানে ..."
"হ্যাঁ-হ্যাঁ, বুঝতে পারছি।"
"আপনাদের মানে ... কোনো problem হলেই আমাকে tell, আমি পাশের ঘরেই live."
"ঠিক আছে।"
উনি চলে যাবার পর মনে-মনে খুব হাসলাম। কী মজার লোক রে বাবা! ঠিক আমাদের স্কুলের চন্দন স্যারের মত। খাওয়া-দাওয়াটা যা ভেবেছিলাম তার চেয়েও বেশি রাজকীয় হল। কোলকাতায় এরকম টাটকা মাছ খুব কমই খেয়েছি। বিকেল পেরিয়ে সন্ধে হয়ে এল। একটা কোকিল একই তালে ডেকে চলছে। আকাশটা আজ অসম্ভব রকম কমলা। দুরের মন্দিরে কোথাও সন্ধ্যারতি চলছে। সাতটা বেজে গেল। সায়ন রায় তো বিকেলে আসার কথা ... এখনো পাত্তা নেই। আমি শারলক হোমস নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলাম, ইন্দ্রদা খাটে শুয়েছিল।
বাইরেটা প্রায় অন্ধকার। আমার সামনের দরজা দিয়ে পুকুরের জলে চাঁদটা হেলছে-দুলছে। সেই দুপুরের পর আর ভজহরি বাবুর সাথে দেখা হয় নি। ইন্দ্রদাকে দেখলাম বিছানায় শুয়ে চোখ বুজে থাকলেও ঘুমোয় নি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একটা ঘটনা ঘটে গেল। বইয়ের পাতা থেকে যেই আমার চোখটা সামনের দরজার দিকে গেছে, দেখি একটা কালো রোমশ হাত দরজার পাল্লায়। শুধু হাতটাই দৃশ্যমান। তার মানে কেউ ওখানে আছে। এটা বুঝে ছুটে যাবার আগেই কালো হাতটা সরে গেল। বাইরে অন্ধকারের মধ্যে একটা গুলির শব্দ। ইন্দ্রদাও এক ঝাঁপে বিছানা থেকে নেমে আমার পেছনে ছুটে এল; দু'জনেই বাইরে এলাম। এসে দেখি ইন্সপেক্টর সায়ন রায়। রিভলভার হাতে দাঁড়িয়ে।
----- সংগৃহীত -----
Special - thanks to Santanu Das (writer)
Collected from - Social Media

পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন__ আসছে খুব শীঘ্রই....
@Anshhi @Anshh3 @Bhoot @Maity Adi @misstti @Babai_43 @RitamRoy @Ladywiththelamp @Uronchondi @Ankita @InkyWhispers @JISHU @Saurabh Dariwala @Meghnad @Oishi
Special - thanks to Santanu Das (writer)
Collected from - Social Media

পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন__ আসছে খুব শীঘ্রই....
@Anshhi @Anshh3 @Bhoot @Maity Adi @misstti @Babai_43 @RitamRoy @Ladywiththelamp @Uronchondi @Ankita @InkyWhispers @JISHU @Saurabh Dariwala @Meghnad @Oishi
Last edited: